অশুভ শক্তি থেকে বাঁচার উপায়


প্রথমেই জানিয়ে রাখা ভাল, ‘অশুভ’ শক্তি বলতে সর্বদাই ভূত-প্রেত-পিশাচ ইত্য়াদিকে বোধানো হয় না। প্রকৃতির খুব সামান্য অংশই মানুষ জানতে পেরেছে। তার বাইরে পড়ে থাকা বিপুল জগতের রহস্যকে ভেদ করা মানুষের পক্ষে অসম্ভব। অতিপ্রাকৃত জগৎ সম্পর্কে যাঁরা চর্চা করেন, তাঁদের মতে আমাদের আশে পাশেই ক্রিয়াশীল রয়েছে এমন কিছু শক্তি, যাকে আমরা আমাদের কোনও যুক্তিতেই ব্যাখ্যা করতে পারি না। অথচ তারা আমাদের প্রাত্যহিকে প্রভাব ফেলে। আমাদের বহু উদ্যোগ, বহু কর্মকে নাশ করে। এদের প্রত্যক্ষভাবে ‘অশুভ’ বলা যায় কি যায় না, সেটা তর্কের বিষয়। কিন্তু এই অজ্ঞাত শক্তির কারণেই আমাদের বিভিন্ন বিপর্যয় ঘটে যায়, মার্কিন সাহিত্যিক এইচ পি লাভক্র্যাফ্‌ট থেকে শুরু করে আমাদের বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় পর্যন্ত তাঁদের অগণিত রচনায় বলে গিয়েছেন সেই অজ্ঞাত শক্তির কথা। এদের কথা ছড়িয়ে রয়েছে তন্ত্রশাস্ত্রের বিভিন্ন গ্রন্থেও।
ব্যাখ্যাতীত এই সব শক্তিকে কি প্রতিরোধ করা সম্ভব? যার স্বরূপ সম্পর্কেই আমাদের কোনও ধারণা নেই, তার মোকাবিলা কীভাবে করা যায়, এই প্রশ্ন মনে উদিত হতেই পারে। কিন্তু এখানে বলে রাখা ভাল, আদিম যুগ থেকেই মানুষ তার বিভিন্ন বিপর্যয়ের পিছনে এই ব্যাখ্যাতীত শক্তির উপস্থিতিকে দেখেছে। এবং বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার দ্বারা তার প্রতিকারের উপায় সন্ধান করেছে। অভিজ্ঞতা মিলিয়া দেখা গিয়েছে, এই প্রতিকার-ক্রিয়াগুলি অনেক সময়েই ম্যাজিকের মতো কাজ করেছে। আসলে মানুষ সর্বদাই চেষ্টা করেছে প্রকৃতির মধ্যে থাকা শুভশক্তিগুলিকে জাগিয়ে তুলতেষ যাতে অজ্ঞাত হলেও অশুভ পর্যুদস্ত হয়।
এখানে তেমন কয়েকটি ক্রিয়ার কথাই বর্ণনা করা হল।
• প্রকৃতির যে ‘শুভ’ শক্তিগুলিকে আমরা সরাসরি জানি, তাদের আমাদের জীবনে অধিক মাত্রায় কাজে লাগানো সর্বাগ্রে প্রয়োজন। যেমন— সূর্যালোক, গাছাপালা, সংগীত।
• এর পরেও থাকে এমন কিছু ক্রিয়া, যা একেবারেই অভিজ্ঞতা-প্রসূত। এর মধ্যে একটি এই প্রকার— ঘরে বিছোনো কার্পেটের উরে কিছুটা নুন ছিটিয়ে রাখলে অপশক্তির প্রভাব হ্রাস পায়।
• বাড়িকে যতটা সম্ভব জঞ্জালমুক্ত রাখুন। পুরনো খবরের কাগজ, পত্র-পত্রিকা, ময়লা-ছেঁড়া কাপড়, বাতিল সামগ্রীকে দূর হঠান। এগুলি অপশক্তিকে দানা বাঁধতে সাহায্য করে। এঁটোকাঁটার বিষয়েও সচেতন থাকুন।
• চিনারা বিশ্বাস করেন, শব্দ অপশক্তিকে প্রতিহত করে। আলোও। অপশক্তি তাড়াতে চিনে বাড়ি পোড়ানোর রেওয়াজ রয়েছে। আমাদের দেশে দীপাবলী উৎসবের পিছনেও রয়েছে একই কারণ।
 • সংগীত অপশক্তিকে প্রতিরোধ করে। তাই, বিশ্বের সমস্ত ধর্মে সংগীতের বিরাট প্রাধান্য রয়েছে। ইসলামের আজান ধ্বনিও অপশক্তিকে দূরে হঠায়। মন্ত্রোচ্চারণের কাজও অপশক্তিকে প্রতিরোধ করে শুভের আবাহন।
• বাড়ির আসবাবপত্রকে মাঝেমাঝেই পুনর্বিন্যস্ত করুন। দীর্ঘকাল একই বিন্যাসে আসবাবপত্র থাকলে একটা স্থবিরতা জন্ম নেয়, যা অপশক্তির উপস্থিতিকে ত্বরান্বিত করে।
• গাছপালার প্রতি যত্নবান হোন। বাড়ির বিভিন্ন জায়গায় গাছ লাগান। গাছ পজিটিভ এনার্জিকে সঞ্চারিত করে।

No comments:

Powered by Blogger.